বরগুনার আমতলীতে সড়ক না থাকায় চলাচলে দুর্ভোগে ৩০ হাজার মানুষ
সংযোগ সড়কের অভাবে ৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু এখন গলার ফাঁসে পরিণত হয়েছে। বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালীর একটি নদীর ওপর নির্মিত এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন কয়েকটি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। সেতু থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যানবাহন চলাচল।স্থানীয়রা জানান, সংযোগ সড়কের অভাবে সেতুটি এখন কোনো কাজেই আসছে না। ফলে সরকারি অর্থ ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু আজ এলাকাবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।জানা যায়, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া ও চাওড়া—এই তিন ইউনিয়নের সংযোগস্থল আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন গুলিশাখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ১৯ মে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ত্রিপুরা ৬ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার টাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই ২০২৪ সালের জুন মাসে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে।তবে সেতুর পশ্চিম পাশে উচ্চতার পার্থক্যের কারণে পূর্ব খেকুয়ানি এলাকার বিদ্যমান সড়কের সঙ্গে সেতুটি সংযুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আটকে যায় সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর এক পাশে কিছুটা বালু ভরাট করা হলেও অপর পাশে কোনো কাজই হয়নি। স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এভাবেই প্রতিদিন শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন সেতুটি। তবে গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।গুলিশাখালীর স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বলেন, “দুই বছর হয়ে গেল সেতুটা নির্মাণ হয়েছে, কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজে লাগছে না। এখনো মানুষ বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হয়। যদি সংযোগ সড়ক হতো, তাহলে আমড়াগাছিয়া বাজার যেতে সময় লাগত মাত্র ১০-১৫ মিনিট।”এ বিষয়ে বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন,“বরগুনা জেলায় কয়েকটি সেতু রয়েছে, যেগুলোর সংযোগ সড়ক এখনো নির্মাণ করা যায়নি। আমতলীর এই সেতুটি তাদের মধ্যে একটি। মূল নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হয়নি। এজন্য নতুন ডিজাইন তৈরি করে তা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত দরপত্র আহ্বান করে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হবে।”স্থানীয়রা দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে এ সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপে এই কোটি টাকার সেতুটি যেন আবার এলাকার মানুষের ‘গলার ফাঁস’ না হয়ে ওঠে।
— খবর বরগুনা
